রণাঙ্গনের বীরকন্যা বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই
গত শুক্রবার (৩০ নভেম্বর) মধ্যরাত দেড়টায় কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচরিপাড়ায় নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে বক্ষব্যাধিসহ নানা রোগে ভুগছিলেন তারামন বিবি। গত ৮ নভেম্বর রাজীবপুর থেকে নিয়ে ময়মনসিংহ সিএমএইচে (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) ভর্তি করা হয় তাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয় তারামন বিবিকে। সেখানে চিকিৎসা শেষে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে সপ্তাহখানেক আগে তাকে রাজীবপুরের বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো।
স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তারামন বিবির শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়। তখন তাকে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন বাড়িতেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন। কিন্তু রাত দেড়টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন তারামন বিবি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন জানান, বীরপ্রতীক তারামন বিবির জানাজার নামায দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বীরপ্রতীক তারামন বিবিঃ
১.তারামন বিবি ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
২.তারামন বিবি ১১ নং সেক্টরে নিজ গ্রাম কুড়িগ্রাম জেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
৩.বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসীকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য “বীর প্রতীক” উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি।
৪.অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯শে ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার তারামন বিবিকে খুঁজে বের করে এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে বীরত্বের পুরস্কার তার হাতে তুলে দেন।
৫.তারামন বিবিকে নিয়ে আনিসুল হকের লেখা ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’ নামক একটি বই রয়েছে।
৬ .আনিসুল হক রচিত ‘করিমন বেওয়া’ নামক একটি বাংলা নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন তারামন বিবি।
৭. ১৯৭৩ সালের সরকারি গেজেট অনুযায়ী তারামন বিবির বীরত্বভূষণ নম্বর ৩৯৪। গেজেটে নাম মোছাম্মৎ তারামন বেগম।
৮.মহান মহীয়সী এই নারী ১ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
৯.মৃত্যুর সময় ওনার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর