পঞ্চগড়ের হাসপাতালগুলোতে তীব্র চিকিৎসক সংকট
নয়ন তানবীরুল বারী: আধুনিক সদর হাসপাতাল পঞ্চগড়ে তীব্র চিকিৎসক সংকট চলছে বহুবছর হতেই। জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই অথচ রোগী হয় প্রায় দুইশত জন।
বহির্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক, একজন শিশু বিশেষজ্ঞ আরেকজন ডেন্টাল সার্জন। মহিলা এবং পুরুষ বিভাগে চিকিৎসক নেই। এছাড়া অন্তর্বিভাগে মাত্র দুজন চিকিৎসক রয়েছেন যেখানে মেডিসিনে ভর্তি থাকেন প্রায় একশত জন রোগী। গাইনীতে মাত্র দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
সার্জারিতে মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা দেন এখানে, ভর্তি থাকেন পঞ্চাশ এর উপরে রোগী।
সব মিলে তিনশত রোগী ভর্তি থাকেন অর্থাৎ আসনের তিনগুন বেশি।
যেখানে একশত শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি চালাতে কমপক্ষে ৩৭ জন চিকিৎসক প্রয়োজন সেখানে রয়েছেন মাত্র নয়জন চিকিৎসক। বাড়তি রোগীর কথা হিসাবে না এনেই।
এমতাবস্থায় এই হাসপাতালে দশজন মেডিকেল অফিসার ও কনসালট্যান্ট আই, কনসালট্যান্ট অর্থপেডিকস, কনসালটেন্ট স্কিন ভিডি,কনসালট্যান্ট ইএনটি, কনসালট্যান্ট মেডিসিন না হলে হাসপাতালের কার্যক্রম চালানো দূরুহ ব্যাপার।
অচিরেই স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ হতে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এছাড়া আটোয়ারী উপজেলায় চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র দুজন, এরমধ্যে একজন মূলত প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত আরেকজন গাইনি কনসাল্ট্যান্ট। কিন্তু কোন মেডিকেল অফিসার নেই। বহির্বিভাগ ও জরুরী বিভাগে চিকিৎসক নেই।
তেঁতুলিয়া উপজেলায় দুজন মেডিকেল অফিসার ও মাত্র একজন গাইনি চিকিৎসক রয়েছেন।
দেবীগঞ্জ উপজেলায় একজন আরএমও দ্বায়িত্ব পালন করছেন। আর একজন মেডিকেল গাইনি চিকিৎসক রয়েছেন।
বোদা উপজেলায় পাঁচজন মেডিকেল অফিসার ও একজন ইউএইচএফপিও রয়েছেন। কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। এখানেও জরুরী ও বহির্বিভাগে চিকিৎসক অপর্যাপ্ত।
সদর উপজেলা সহ পুরো পঞ্চগড়ে তীব্র চিকিৎসক সংকটের ফলে স্বাস্থ্য সেবা নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
প্রতিদিন রোগী সামলাতে এসব চিকিৎসককে হিমসিম খেতে হয়। রোগীরা অসন্তুষ্ট হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রায় রোগীর সাথে চিকিৎসা কর্মীদের বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। বলা যেতে পারে সরকার অপর্যাপ্ত চিকিৎসক দিয়ে পঞ্চগড়ে রোগী বনাম ডাক্তারকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
তাই সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ রয়েছে অচিরেই পঞ্চগড়ে পর্যাপ্ত ডাক্তারের বন্দোবস্ত করা হোক নতুবা এসব সরকারি হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করা হোক এমন অভিমত দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ জনতা।